Pages

নামাজের নিয়ত করা যাবে কি

সূরাঃ ৫১ আয-যারিয়াত  Adh-Dhariyat  سورة الذاريات৫৬. আর আমি সৃষ্টি করেছি জিন এবং মানুষকে এজন্যেই যে, তারা কেবল আমার ইবাদাত করবে।

 নামাজে তো, নাওয়াইতুয়ান উসাল্লি'য়ালা + কোন ওয়াক্তের কত রাকাআত ফরজ, ওয়াজিব, সুন্নত পড়া হচ্ছে + কা' বাতিশ শারিফাতি + আল্লাহু আকবার- আগে / পূর্বে এইভাবে নিয়ত করা হত। কিন্তু বর্তমানে অনেক শাইখ, মুফতি, আলেমেদ্বীন এভাবে নিয়ত করাকে বিদাআত বলছেন।


প্রশ্ন : মুখে নিয়ত না পড়ে নামাজের নিয়ত করা যাবে কি? যেমন : আমি যদি কিছু না পড়ে আল্লাহু আকবার বলে নিয়ত বাঁধি, তাতে আমার নামাজে কি ভুল হবে?

নিয়ত আরবী শব্দ। যার অর্থ হল, ইচ্ছা বা সংকল্প। আর ইচ্ছার স্থান হচ্ছে অন্তর। তা মুখে উচ্চারণ করার প্রয়োজন নেই।

আল্লাহ তাআলা বলেন, “হে নবী! (আপনি বলে দিন, তোমরা মনের কথা গোপন করে রাখ অথবা প্রকাশ করে দাও, আল্লাহ সে সবই জানতে পারেন। আর আসমান জমিনে যা কিছু আছে সে সবই তিনি জানেন। আল্লাহ সর্ববিষয়ে শক্তিমান।” (সূরা আল ইমরান- ২৯)

উত্তর : নামাজে নিয়ত পড়ার কথা কোথাও আসেনি। নিয়ত করাটাই হচ্ছে নামাজের বিধান। নিয়ত পড়াটাই হচ্ছে নামাজের মধ্যে যেটা আসেনি, সেটা আমরা করছি। নামাজের মধ্যে নিয়ত পড়াটা প্রায় সব ওলামায়ে কেরামের ঐকমত্যে বিদআত।

কারণ, নিয়তের জন্য কোনো শব্দ রাসূল (সা.) শিক্ষা দিয়ে যাননি। হাদিসের মধ্যে কোনো শব্দ সাব্যস্ত হয়নি। এমন কোনো বিধান নেই যে এই বাক্যগুলো পড়ে নিয়ত করতে হবে। নিয়তটা হচ্ছে অন্তরের সংকল্পের বিষয়, মুখে উচ্চারণ করার বিষয় না।

# ইবনে উমার (রা:) বলেনঃ নবীজী যখন নামাযে দাঁড়াতেন; তখন তিনি তাঁর হাত দুটি বাহু বরাবর উঠাতেন। অতঃপর তকবীর ‘আল্লাহু আকবার’ বলতেন।)মুসলিম, অধ্যায়ঃ নামায, অনুচ্ছেদ নং ৯ হাদীস নং ৮৬০-৮৬১

হাদীসটি স্পষ্ট যে, তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তকবীরের মাধ্যমে নামায শুরু করতেন। নিয়ত পড়ে তকবীর দিতেন না।
# নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নামায ভুলকারী জনৈক সাহাবীকে নামায শিক্ষা দেওয়ার সময় বলেনঃ ‘‘যখন নামাযে দাঁড়াবে তখন তকবীর দিবে’’। (বুখারী, নং৭৯৩)

এখানেও হাদীস স্পষ্ট যে, নামাযে দাঁড়ালে তকবীর দিয়ে নামায শুরু করতে হয়। কেউ যদি নিয়ত পড়ে শুরু করে তাহলে হাদীসের বরখেলাফ তো অবশ্যই হয়।
# নবীজী আরো বলেনঃ ‘‘নামাযের চাবি পবিত্রতা অর্জন, (পার্থিব কাজ-কর্ম, কথা-বার্তা ইত্যাদি) তকবীর বলার মাধ্যমে হারাম হয়, (আর সে সকল হালাল হয়) সালামের মাধ্যমে’’। (তিরমিযী, অধ্যায় পবিত্রতা অর্জন, প্রথম হাদীস)

এ হাদীসে নামাযের শুরু এবং শেষ বর্ণিত হয়েছে। শুরু হচ্ছে তকবীরে তাহরীমা তথা আল্লাহু আকবার বলা। নিয়ত পড়া নয়।

১- অনেক মানুষকে নামাযের কথা বললে, বলেন নিয়তই জানিনা নামায কিরূপে পড়ব? অর্থাৎ সে মনে করে আরবীতে তৈরি করা এসব নিয়ত মুখস্ত না করলে নামায হয় না। কি আশ্চার্য ! আবিষ্কৃত বিদআতী কিছু শব্দ মানুষকে নামায থেকে দুরে সরায় !


সুতরাং অন্তরের দৃঢ় সংকল্প ও ইচ্ছা করার নামই হল নিয়ত। মুখে আরবিতে নামাজে নিয়ত পড়া নব উদ্ভাবিত বিষয়, আর তা বিদআত এবং বিদআত বর্জনীয়।

No comments:

Post a Comment

কুরআনের কিছু আয়াত

 কুরআনের কিছু আয়াত এখানে এমন কিছু কুর'আনের আয়াত উল্লেখ করা হয়েছে যেগুলো আমাদের অন্তরকে শীতল করবে এবং পরকালীন প্রস্তুতি নিতে সাহায্য ক...